মঙ্গলবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

বাংলার সুখ, বাংলার দুঃখ

বাংলার সুখ, বাংলার দুঃখ





বিনামূল্যে ফন্ট ডাউনলোড লিংক--
অহনলিপি-বাংলা১৪ ইউনিকোড ফন্ট প্যাকেজ ডাউনলোড লিংক:  


ডাউনলোড করা এই ইউনিকোড ফন্ট প্যাকেজের মধ্যে আছে ইউনিকোড ফন্ট(কম্পিউটারে লেখার হরফসমূহ) AhanLipi-Bangla14.ttf তার উপরে ক্লিক করলে ফন্ট ইনস্টল হয়ে যাবে৤ সঙ্গে কিবোর্ড(setup.exe) দেওয়া আছে৤ তাতে ক্লিক করলে কিবোর্ড ইনস্টল হয়ে যাবে৤ কিবোর্ড দিয়ে সহজে লিখতে পারবেন৤ 

 যুক্তবর্ণ স্বচ্ছসহজ৤ সঙ্গে কিবোর্ডের নক্সা দেওয়া আছে৤ 


অন্যান্য ফন্টও ডাউনলোড করে নিন৤ 


এই ফন্ট না হলে লেখার উদ্দেশ্য বোঝা যাবে না৤



সঙ্গে দেওয়া ফাইল দেখে নিতে হবে৤

অহনলিপি-বাংলা১৪ ডিফল্ট টেক্সট ফন্ট সেটিং
(AhanLipi-Bangla14 Default text font setting)
Default text font setting ডিফল্ট টেক্সট ফন্ট সেটিং

 (bottom right) click on down arrow head 

Settings
Default input Language
Bengali(India)--Bn14
Installed Services
(move up)--BN Bengali(India)--Keyboard--Bn14
                   EN English
 -->OK
→→→→→ (Display Clipboard--Font--Paragraph--Styles--Editing
(right corner) styles
Normal--right click
Modify
Modify style
Normal
formatting
AhanLipi-Bangla14=11point
all script/complex
New documents Based on this template 
Format 
Font
Latin text
Font
AhanLipi-Bangla14, Regular =11point
Complex scripts
Font
AhanLipi-Bangla14, Regular =11point
-->OK
-->OK
এবারে টেক্সটে ‘অহনলিপি-বাংলা১৪’ AhanLipi-Bangla14 ফন্টে সকল কিছু লেখা যাবে৤ 
এবং
অহনলিপি-বাংলা১৪ ডিফল্ট ইন্টারনেট ফন্ট সেটিং
(AhanLipi-Bangla14 Default Internet font setting)
Default Internet font setting ডিফল্ট ইন্টারনেট ফন্ট সেটিং

   
on internet(Mozilla Firefox)
(top left) Tools  
              Options > contents
              Fonts & Colors
              Default font:=AhanLipi-Bangla14
                        Advanced... 
                                    Fonts for: =Bengali
                                    Proportional = Sans Serif,   Size=20
                                    Serif=AhanLipi-Bangla14
                                    Sans Serif=AhanLipi-Bangla14
                                    Monospace=AhanLipi-Bangla14,  Size=20
                                    -->OK
            Languages
            Choose your preferred Language for displaying pages
            Choose
            Languages in order of preference
            Bengali[bn]
            -->OK
  --> OK
          এবারে ইন্টারনেট খুললে অহনলিপি-বাংলা১৪’ ফন্টে সকলকিছু দেখা যাবে৤ নেটে একই ফন্টে সব কিছু লেখাও যাবে৤ 





 বাংলার সুখ, বাংলার দুঃখ  


১২/০৯/২০১৮ বুধবার৤



বাংলার সুখ, বাংলার দুঃখ

মনোজকুমার দ. গিরিশ






       বাংলার সুখও যেমন আছে, আছে তেমনি দুঃখও৤ অতি প্রাচীনকালে যেতে হবে না৤ শ’খানেক বছরের ইতিহাস দেখলেই তার প্রবল সুখদুঃখের হদিস পাওয়া যাবে৤

       ১৯০৫-এ ইংরেজ বঙ্গভঙ্গ করে৤ রবীন্দ্রনাথ লিখলেন “আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি” গানটি৤ বঙ্গভঙ্গের আসল কারণ, বাঙালিরা বিপজ্জনক৤ ক্ষুদিরাম, বাঘা যতীনেরা তাদের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল৤ যদিও তখন ইংরেজ সাম্রাজ্যে সূর্য অস্ত যেত না, সারা পৃথিবী জুড়ে এত ব্যাপ্ত ছিল তাদের সাম্রাজ্য৤ এই বাংলা দিয়েই ইংরেজদের ভারত জয়ের সূচনা হয় পলাশির প্রাঙ্গণে ২৩জুন ১৭৫৭ খ্রিস্টাব্দে৤ মুর্শিদাবাদ জেলা সংলগ্ন নদীয়ার পলাশির আম বাগানে বাংলার সূর্য ডুবে গেল৤ ফরাসি ওলন্দাজেরা বাংলার কোনও কোনও অঞ্চল দখল করলেও  ইংরেজদের সৌভাগ্যরবি উজ্জ্বল হল কোলকাতা অঞ্চল দখল করায়৤

       বাংলার সম্পদের কথা আগেই বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছিল, কারণ এখানে ব্যবসা করলে এক টাকায় পাঁচ হাজার টাকা লাভ হয়(১:৫০০০)! তাই ১৬০০ খ্রিস্টাব্দের শেষ দিনে গঠিত হওয়া ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিতে সে দেশের রানিরও শেয়ার ছিল৤ আর এমনি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি তৈরি করেছিল পৃথিবীর সাতটি জাতি৤ সম্পদ থাকাও বিপদের, সেটা ব্যক্তিগত সম্পদই হোক বা দেশের সম্পদই হোক৤ 

       এই নদীয়া জেলারই বর্ধমান সংলগ্ন নবদ্বীপে আবির্ভূত হয়েছিলেন মানব জীবনের প্রণোদনা শ্রীচৈতন্য( ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৪৮৬ খ্রিস্টাব্দ, দোলপূর্ণিমা. জন্মস্থান, নবদ্বীপ )৤

       বিশ্বজুড়েই ইংরেজ সাম্রাজ্য তৈরি হল, তাদের দক্ষতা ও কূট কৌশলের জন্য৤ যখন ইংরেজ ১৯০৫-এ বঙ্গভঙ্গ করে তখন ইংরেজ সাম্রাজ্যে সূর্য অস্ত যেত না(সরকার তাদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে ১৯শে জুলাই, ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে এবং বঙ্গভঙ্গ কার্যকর হয় একই বছরের ১৬ই অক্টোবর। ১৯০৫ খ্রিস্টাব্দে৤ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বঙ্গভঙ্গ রদ  করার প্রস্তাবকদের জন্য এক মর্মস্পর্শী গান লেখেন “আমার সোনার বাংলা”)৤ বঙ্গভঙ্গ হবার পরে তার বিরুদ্ধে প্রবল বিক্ষোভ আন্দোলন শুরু হয়৤ সুরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখের নেতৃত্বে৤ ইংরেজ প্রমাদ গণল৤

       ইংরেজ চিন্তায় পড়ে গেল কারণ তখন বাংলার কোলকাতা ভারতের রাজধানী৤ ভারত পরিচালনার কেন্দ্র অচল হলে সমস্যা অনেক৤ তখন তাদের ভাবনা বাংলাকে দু-ভাগ করে বাঙালির শক্তি, দাপট কমানো৤ কিন্তু তা কমানো গেল না৤ তাই তাদের দমাবার পথ কী হবে? এখান থেকে রাজধানী বরং সরিয়ে নেওয়া যাক৤ তাই তারা ভারতের পুরানো রাজধানীর পরিকাঠামো ব্যবহার করতে ভারতের রাজধানী সেখানে নিয়ে যাবার পরিকল্পনা করে৤ বাংলার মতো অবস্থা সেখানে নেই৤ যদি তেমন অবস্থা ভারতীয়রা গড়ে তোলে আদৌ, তবুও তা বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছাতে দীর্ঘ সময় লাগবে৤ কোনও দিন আদৌ তেমন বিপজ্জনক হবে কিনা সেটাও বিবেচ্য৤ তাই দিল্লিকেই তারা বেছে নিল৤ বঙ্গভঙ্গ রদ করে ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের ১২ ডিসেম্বর কোলকাতা থেকে দিল্লিতে রাজধানী সরিয়ে নেওয়া হয়৤

       ইংরেজ হল ব্যবসায়িক জাতি তাই এ পরিবর্তনে যে বিপুল ব্যয় এবং আয়োজন দরকার তা নিয়ে কথা উঠেছিল৤ সেটা স্বাভাবিক, কিন্তু নিরাপত্তার প্রশ্নে তা গ্রাহ্য হয়নি৤ বাংলার স্বাধীনতা-বিপ্লবীরা ইংরেজদের প্রবল আতঙ্ক হয়ে উঠেছিল৤ তাই যেখানে তেমন বৈরী নেই, তারা সেই দিল্লিতে সরে গেল৤ সারা দেশের সবাই সমান  মনোভাবের ছিল না৤ 
       কোলকাতা রাজধানী থাকাকালীন --এই বঙ্গে যেন মহা মানবের ঢল নেমেছিল-- রামমোহন, বিদ্যাসাগর, বিবেকানন্দ, ডিরোজিও থেকে রবীন্দ্রনাথ, শত সহস্র পুষ্পে পল্লবে বিকশিত হয়েছিল দেশ৤ রাজধানী সরে যাবার পরের বছরে(১৯১৩ খ্রি.) রবীন্দ্রনাথের হাতে এলো সাহিত্যের নোবেল পুরস্কার৤ যে নোবেল সাহিত্য-পুরস্কার ইউরোপের বাইরে রবীন্দ্রনাথই প্রথম পেলেন৤  কত সাহিত্যিক, কবি, শিল্পী, সমাজকর্মী, ব্যবসায়ী এলেন৤ এলেন ভারতশ্রেষ্ঠ ব্যবসায়ী দ্বারকানাথ ঠাকুর(রবীন্দ্রনাথের পিতামহ/ঠাকুর্দা) এখনও নাকি তিনি ব্যবসা জগতে সর্বশ্রেষ্ঠ, একথা লিখেছেন সাহিত্যিক শংকর৤ বাংলা বাঙালি তখন সবার শীর্ষে৤ যদিও পরবর্তীকালে ব্যবসায়ে বাঙালি তেমন আর গণ্য রইল না৤ কিন্তু বাংলা ভাষা এবং সাহিত্য বিশ্বজনের কাছে আদৃত৤ এমন তার গুণ এবং গৌরব যে, অতি সম্প্রতি হিন্দি চলচ্চিত্র জগতের এক বিখ্যাত অভিনেতা বলেছেন, “তবে একটা কথা বলব, বাংলা এত মিষ্টি ভাষা যে শুনলেই মনে হয় গলা থেকে রসগোল্লা ঝরে পড়ছে” (অক্ষয়কুমার ১৮/০৮/২০১৮, দৈনিক সংবাদপত্র,  ‘সংবাদ নজর’, পৃঃ-৭)৤ কথাটা সাহিত্য করে হয়তো বলা হয়নি, তবে তাঁর মনোভাব এতে স্পষ্ট৤ একজন ইংরেজ মহিলা(হানা টম্পসন), যিনি পরে বাংলা শিখেছেন, এবং বাংলা শেখার বই লিখেছেন, তিনি বলেছেন, “তখনো আমি আশা করিনি যে এই ভাষাটি আমার এত ভালো লেগে যাবে। আমি প্রায় সঙ্গে সঙ্গে রীতিমতো বাংলা ভাষার প্রেমে পড়ে যাই।প্রজাপতি’, ‘বৃহস্পতিবার’, ‘সাধারণত--   প্রথম দিকে বাংলা ভাষার এ শব্দগুলো আমার খুব ভালো লেগেছিল। আমি বুঝতে পেরেছিলাম, বাংলা কত সুন্দর একটা ভাষা।” --এপ্রিল ২৪, ২০১৫, সাক্ষাৎকার, প্রথম আলো৤ বাংলাদেশের দৈনিক সংবাদপত্র]৤ বাংলা ভাষায় তিনি মুগ্ধ হয়ে গেছেন৤ 

       রবীন্দ্রনাথের চিনা অনুবাদক, অধ্যাপক দং ইউ চেন জানিয়েছেন বাংলাভাষাকে আমার গান মনে হয়৤ আর, গানে ডুবে গেলে ভেসে ওঠার উপায় নেই৤ গানের টান খুব গভীর৤[আজকাল, সংস্কৃতি, ২২/০৫/২০১০শনিবার, পৃঃ-২]৤ 
           তাঁর মাতৃভাষা বাংলা নয়, আমার মাতৃভাষা তো বাংলাই, আমারও যে মনে হয়, রবীন্দ্রসংগীতের বাণী, বর্ণনা, ছন্দোময়তা, সুর-- মানব জীবনকে যেন সার্থক করে তোলে৤ একজন বিদেশিকে তা মোহিত মোহমুগ্ধ তো করতেই পারে৤ একজন প্রয়াত খ্যাত জাপানি “বাংলাভাষী” কাজুও আজুমা, বিশ্ববঙ্গ সম্মেলন উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গ বাংলা আকাদেমি সভাকক্ষে, ৩০-১২-১৯৯৯ তারিখে বলেছেন, “আমি পৃথিবীর কয়েকটি ভাষা শিখেছি৤ বাংলাভাষা সবচেয়ে সুন্দর ও মধুর মনে করি৤ বাঙালি আবেগপ্রবণ জাতি, বাংলাভাষা তার ভাবপ্রকাশের উপযুক্ত ভাষা৤” এ বক্তৃতাটির সময়ে আমি সেখানে উপস্থিত ছিলাম, এবং তাঁর বক্তব্য নোট করে নিয়েছি৤

       প্রয়াত বেলজিয়াম নিবাসী একজন ফরাসিভাষী পাদ্রি হলেন ফাদার দ্যতিয়েন, এমন দক্ষ ঘরোয়া বাংলা লিখিয়ে বাংলাভাষায়ও দুর্লভ৤ এমন দক্ষতায় তিনি বাংলা লেখেন যে, তাঁকে বিদেশি বলে মনে হয়না, বরং এত ঘরোয়া বাংলা লিখতে বোধহয় বাঙালিরাও পারেনা৤ ‘ডায়েরির ছেঁড়া পাতা’ তাঁর বিখ্যাত জনপ্রিয় বই৤

       অবাক হই, বাংলা ভাষায় এত কীসের আকর্ষণ, যা শেখা কঠিন, লেখা কঠিন৤  ভাষায় থাকে আবহাওয়ার প্রভাব৤ নরম পেলব পলি পরিসেবিত এই ভূমে চারিদিকে চির সবুজের সমারোহ৤ ‘এমন ধানের উপর ঢেউ খেলে যায় বাতাস কাহার দেশে’, সেটা তো এই দেশ৤ বাতাসের সেই সুখ-স্পর্শ শুধু ধানের ক্ষেত নয়, মানুষের মনেও ছুঁয়ে যায়৤ তার ভাষা সহজ নরম আবেগময় হবে এটাই তো ঠিক৤ তাই তো জাপানি “বাংলাভাষী” কাজুও আজুমা বলেছেন, ‘...বাঙালি আবেগপ্রবণ জাতি, বাংলাভাষা তার ভাবপ্রকাশের উপযুক্ত ভাষা৤’
       বাংলায় আছে ১০টি স্বরচিহ্ন আর ৮টি ব্যঞ্জনচিহ্ন তথা ফলা, এই মোট ১০+৮=১৮ রকম চিহ্ন দিয়ে হরফকে ঘেরার ব্যবস্থা৤ আর বাংলায় আছে সকল রকম ছাড় দিয়েও প্রায় চারশত(৩৯৫) বিশুদ্ধ যুক্তব্যঞ্জন৤

       বাংলা লিপির উদ্ভব ভারতের ব্রাহ্মীলিপির বিবর্তনের মাধ্যমে৤ বাংলা লেখার পদ্ধতিও সেই ব্রাহ্মীর লিখনপ্রণালী অনুসারে৤ জটিল এবং কখনও কখনও বিভ্রান্তিকর৤ কতটা ভালোবাসলে এই দুরূহ কাজে এগোনো যায়, তা অনুভব্য৤ বাংলা শেখায় তো কোনও আর্থিক সুবিধাও হয় না৤ মনের মন্দিরে শুধু তা কেবল ঝংকার দিয়ে ওঠে৤  

       বাংলার মতো লিখন পদ্ধতি ওড়িয়া/ওডিয়া/ওডিআ ভাষারও৤ কিন্তু ওডিয়া শিখতে গিয়ে যুক্তবর্ণে আটকে গিয়ে ক্ষান্ত হলাম৤ বাংলা লিখনকারিগরি সহজ হোক৤ আমার একটি তেমন প্রস্তাব আছে৤ নেটে তা আপলোড করা হয়েছে৤

       বাংলা লেখার এখন প্রথম প্রজন্ম চলছে৤ দ্বিতীয় প্রজন্মে যুক্তবর্ণ স্বচ্ছ সরল হবে৤ এর প্রয়োগ এখুনি করা যাবে৤

       পরবর্তী তৃতীয় প্রজন্মে সকল স্বরচিহ্ন হরফের পর বসবে৤ এজন্য বাংলা বানান তদনুসারে সংশোধিত, পরিবর্তিত করে নেওয়া হবে৤ যুক্তবর্ণের প্রয়োগ আরও উন্নত এবং স্বচ্ছ হবে৤ প্রথম--প্‌রথম-- প্‍রথম৤ তর্ক-- তর্‌ক-- ত৒ক৤ দেশ-- দ৙শ, নীতি--নীতী৤ এর প্রয়োগ হতে পারে ৫০ বছর পরে-- এভাবে লেখা এবং পড়ায় অভ্যস্ত এবং রপ্ত হবার পরে৤

       বাংলা লেখার চূড়ান্ত পর্যায় হল চতুর্থ প্রজন্মের লিখন কারিগরি৤ এই কারিগরিতে সকল স্বরচিহ্ন এবং ব্যঞ্জনচিহ্ন/ফলা অবলুপ্ত হবে৤ লেখা হবে হরফ পর পর পাশাপাশি বসিয়ে ইংরেজির কায়দায়৤ এতে বাংলা লেখা আরও সরল স্বচ্ছ হবে৤ লেখা হবে একতলা(monotier)৤ যা ছিল দ্বিতীয় প্রজন্মে তিনতলা(3-tier), তা থেকে তৃতীয় প্রজন্মে দুই তলা(2-tier)৤ অর্থাৎ তিনতলা(3-tier)-- দুই তলা(2-tier)-- একতলা (monotier)৤ লিখন প্রক্রিয়া যতই এগোবে ততোই লিখন-উচ্চতা/মুদ্রণ-উচ্চতা কম লাগবে৤ মুদ্রণ-উচ্চতা কম লাগার ফলে লেখার হরফ বড় হবে, যদিও মুদ্রণ-স্থান কিন্তু কম লাগবে৤ এতে বইয়ের দাম কমবে৤ হরফের উচ্চতা বাড়বে, লেখা স্পষ্ট যুক্তিসংগত হবে৤ বাংলা লিখনের মুক্তি ঘটবে৤ দেশি বিদেশি সবার পক্ষে বাংলা লেখা, বাংলা শেখা সহজ হবে৤ এই প্রাণময় অমৃতস্বাদের ভাষাটি আস্বাদনে কেউ আর বঞ্চিত হবেন না৤ সবার জন্যই বাংলা উন্মুক্ত হবে৤ লিখন কৌশলের মাধ্যমে বাংলাকে আর গূঢ় গূহ্য করে রাখা হবে না৤

       মানুষ ভাষা শেখে শুনে শুনে, শিশুরাও যেমন মাতৃভাষা শেখে শুনে শুনেই, বইটই পড়ে নয়৤ লেখা হল ভাষার স্থায়ী রূপ, লেখাটা কোনও প্রাকৃতিক ব্যাপার নয়, সুযোগ সুবিধাজনক পরিবর্তনের মাধ্যমে যদি তা সহজে ধরা যায় তবে সেটা করতে হবে৤

       তবে মনে রাখতে হবে, লেখা হল এক অলিখিত সামাজিক চুক্তি, তাকে যথেচ্ছ করা চলে না, তাই চাই একটি সর্বমান্য সংসদ, যার নির্দেশে সব চলবে৤ ৪র্থ প্রজন্মের লিখনকারিগরি ব্যবহার করা হবে ১০০ বছর পরে৤ 

       বাংলা অঞ্চল-- পশ্চিমবঙ্গ, এবং বাংলাদেশে বাংলা একাডেমি আছে৤ এই একাডেমিগুলি এবং অন্য বাংলা অঞ্চল ত্রিপুরা সহ বাংলা চর্চাকারী অঞ্চল আসাম ও দেশি বিদেশি সকল সংগঠনের সকলে মিলে একটি সর্বমান্য বাংলা-সংসদ তৈরি করতে হবে৤ 
এক-একটি অঞ্চলে, কিংবা এক-একটি অভিধানে, এক-একটি সংবাদপত্রে, কিংবা কোনও ব্যক্তির নিজস্ব বানান প্রয়োগ বন্ধ৤ কিংবা লেখার কৌশলে ভিন্নতর করা চলবে না৤ 

       একটি মান্য অভিধান থাকতে হবে, সেখানে যে-শব্দের যে-বানান দেখানো হবে

তা-ই সবাইকে মেনে চলতে হবে৤ কারও যদি নতুন কিছু উপায় মনে জাগে তবে তা প্রস্তাব আকারে সংসদে পাঠাতে হবে৤ বাংলা-সংসদ অনুমোদন করলে তবে তা ব্যবহারযোগ্য, অন্যথায় নয়৤ 

       বাংলায় তৈরি হয়েছে অত্যাধুনিক ইউনিকোড ফন্ট(কম্পিউটারে লেখার হরফসমূহ) ফলে লেখার মুক্তি ঘটেছে৤ যদিও বাংলা লেখার জন্য একটিই সর্বমান্য নির্দিষ্ট কিবোর্ড 
না-থাকায় লেখার মুক্তি অনেকটাই অধরা থেকে গেছে৤ তাই একটি সর্বমান্য নির্দিষ্ট কিবোর্ড চাই৤ অর্থাৎ-- ১৤বানান নির্দিষ্ট হবে, ২৤লেখার রীতি একই রকম হবে, ৩৤নির্দিষ্ট কিবোর্ড থাকতে হবে, ৪৤মান্য অভিধান থাকতে হবে, ৫৤নতুন ভাবনা কারও থাকলে তা সংসদে অনুমোদনের জন্য পাঠাতে হবে৤ ৬৤ইংরেজির মতো বাংলায়ও এমন কম্পিউটার সফ্‌টওয়ার তৈরি করতে হবে, লেখার সময় বানানে বিচ্যুতি ঘটলে, শব্দের তলায় লাল দাগ পড়বে, যেমন ইংরেজিতে হয়৤ তবেই বাংলা ভাষা, বানান, ও লেখার মুক্তি ঘটবে৤ মুক্তি মানে যথেচ্ছাচার নয়, মুক্তি মানে নির্দিষ্ট পথ ও পদ্ধতি৤

       বাংলা ছাপার শুরু ইংরেজদের হাতে(১৭৭৮ A Grammar of Bengal language--ইংরেজিতে লেখা বাংলা ব্যাকরণ)৤ তারা বর্ণ সংগঠনে অনেক যুক্তিপূর্ণ পথ ও প্রক্রিয়ার সূচনা করলেও 

সেই রীতি পরবর্তীকালে আমরা মেনে চলিনি৤ ইংরেজদের হাতে ১৭৭৮ খ্রিস্টাব্দে বাংলা ছাপা শুরুর ফলে দেশে বিদ্যার-উৎসবের সূচনা হল৤ তারা বিদেশি হবার ফলে বাংলা লিখনে বর্ণের যে যৌক্তিক ব্যবস্থাপনা করেছিল তা থেকে অহমিকা বশে আমাদের সরে আসা ঠিক হয়নি৤ তারা বিদেশি, বাংলার তারা কী জানে? এই অহমিকা আমাদের বস্তুত পিছিয়ে দিয়েছে৤ সেটা গভীরভাবে অনুধাবন করতে হবে৤ বরং তাদের দেখানো পথ, পদ্ধতি অনুসরণ করলে অগ্রগতি হত দ্রুত৤ ২য় প্রজন্ম, ৩য় প্রজন্ম, ৪র্থ প্রজন্মের লিখনকারিগরি বস্তুত বলা যায় তারই বিকশিত প্রক্রিয়া৤

       দ্বিতীয় প্রজন্মের লিখনকারিগরিতেই বাংলা লেখা ইংরেজিকেই ছাপিয়ে গেছে, সেটা তাদের দেখানো পথ অনুসরণ করেই৤ সেটা আগে করলে আরও আগে অগ্রগতি ঘটত এবং বাংলার আরও প্রসার, প্রচল হত৤ 
লিংক: বাংলা লেখা ছাপিয়ে গেল ইংরেজিকে :

http://banglamoy.blogspot.in/2014/10/blog-post.html


       বাঙালির তো সাম্রাজ্য নেই, তারা সাম্রাজ্যবাদী নয়, কিন্তু বাংলা যে আদৃত এবং মধুর ভাষা, তা তার আভ্যন্তরীণ গুণের জন্য৤ সে গুণ বাড়লে, আদর বাড়বে, প্রসার ঘটবে৤ ইংরেজেরা বাংলার কী জানে, এই অহং আমাদের পিছিয়েই রেখেছে৤ সেই অহং ঘুচুক, অগ্রগমন ঘটুক৤

       ইংরেজ সাম্রাজ্যবাদী ঠিকই, তবু একথা মনে রাখতে হবে যে, ইংরেজ না এলে সভ্যতায় আমরা এখনও মধ্যযুগে পড়ে থাকতাম৤ বাংলা ছাপা যে কবে শুরু হত তা কে জানে? ছাপার জন্য বাংলা হরফ তৈরি করতে এই বিদেশিরা যে উদ্যোগ নিয়েছিলেন তা অকল্পনীয়৤ এদেশে যে স্বাধীনতার চেতনা তৈরি হয়েছিল তাও কিন্তু ইংরেজদের কল্যাণে৤ তারা বাংলা শিক্ষার যে অদম্য উদ্যোগ নিয়েছিল তা তাদের সাম্রাজ্য বিস্তার ও সাম্রাজ্য রক্ষার সুবিধার্থে বটে, কিন্তু সেটাই-- শিক্ষার বিস্তার ঘটিয়েছে, স্বাধীনতার চেতনাও তৈরি করেছে৤ তাদের সাম্রাজ্য রক্ষার প্রয়াস তাদেরই বিরুদ্ধে লড়াইয়ের শক্তি জুগিয়েছে৤ তারা বিতাড়িতও হয়েছে, রয়ে গেছে, শিক্ষা, রয়ে গেছে সভ্যতার আলো৤  






       বাঙালিরা ইংরেজদের আতঙ্কের কারণ হয়ে উঠেছিল৤ কারণ তারাই প্রথম ইংরেজদের সংস্পর্শে আসে, ইংরেজ এখানেই প্রথম তাদের ঘাঁটি গাড়ে৤ তাদের সংস্পর্শে এসে আধুনিক শিক্ষা, আধুনিক সভ্যতা ভারতে তাদের কাছে সবচেয়ে আগে পৌঁছায়৤ ফলে তারা যেমন সজাগ সচেতন হয়ে ওঠে, তেমনি তারা স্বাধীনতার চেতনায়ও আলোকিত হয়৤ তারা ইংরেজদের বিরুদ্ধেই অস্ত্র ধরতে শুরু করে৤ ক্ষুদিরাম, বাঘা যতীন, মাস্টারদা সূর্য সেনরা তৈরি হন৤

        ইংরেজ প্রমাদ গণে, তারা এই বিপ্লবীদের থেকে আত্মরক্ষার চেষ্টা শুরু করে৤ প্রথমে বঙ্গভঙ্গ করে৤ অজুহাত ছিল শাসনের সুবিধা৤ তারা মনে করেছিল এতে বাঙালি জব্দ হবে৤ কিন্তু হল না৤ বরং বঙ্গবিভাগ রোধ করতে বাঙালিরা জোরদার আন্দোলন শুরু করে৤ ইংরেজ সমস্যায় পড়ে যায়, তারা নতুন পথ ভাবতে থাকে৤ ৭ বছর পরে অবশেষে ১৯১১ খ্রিস্টাব্দের ১২ ডিসেম্বর ভারতের রাজধানী কোলকাতা থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় দিল্লিতে৤ কোলকাতা ভারতের রাজধানী ছিল ১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দ থেকে ১৯১১ অবধি, ১৩৯ বছর৤ এবার বাঙালি সত্যিই জব্দ হল, তাদের শক্তি কমে গেল, কারণ মাথাহীন হয়ে কত সে লড়াই করবে? যদিও ইংরেজ একই সঙ্গে বঙ্গভঙ্গ রদ করে৤ রাজনৈতিক শক্তির মূল সরে গেল বলে বাঙালি আর তেমন জোরদার রইল না৤ রাজধানী থাকাকালীন ১৩৯ বছরে বাংলায় দেখা দিল মহামানবের ঢল-- শিল্পী, সাহিত্যিক, ব্যবসায়ী, কর্মী, রাজনীতিক, বিজ্ঞানী, ঐতিহাসিক থেকে শুরু করে সকল স্তরের জ্ঞানী গুণী প্রতিভার সমাবেশ৤ অর্থাৎ বাঙালিরা নিজেদের কর্মশক্তি ও প্রতিভা বিকাশের অবাধ ক্ষেত্র পেয়েছিল৤ সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেল পুরস্কার  পেলেন৤ দেশ আলোয় ঝলমল করে উঠল৤  

       ঠিক একই রকমভাবে আলোয় ঝলমল করে উঠল অন্য কিছু বাঙালি যারা এতকাল তাদের প্রতিভা বিকাশের মসৃণ ক্ষেত্র পায়নি, যদিও তারা বাঙালি হিসেবে সংখ্যাগরিষ্ঠ৤ তা হল বাংলাদেশ৤ ধর্মীয়ভাবে বাঙালির প্রধান ভাগ চারটি মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ৤ ১৯৪৭-এ বাংলা ভাগ হল, তাতে ইংরেজদের প্রধান ভূমিকা ছিল৤ দেশ ভাগ হয়ে পূর্ব অংশের বাঙালি কিন্তু প্রথমে আরও ফাঁদে পড়ে গেল৤ বাংলাভাষা সমগ্র পাকিস্তানের জনগরিষ্ঠ ভাষা হলেও তাকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা করা হল না৤ সেখানে রাষ্ট্রভাষা করা হল উর্দুকে৤ সহজেই এ থেকে ষড় অনুমান করা যাবে৤ 

       স্বাধীনতার আগে বাংলায় দেখা দিল হিন্দু-মুসলমান বিরোধ, ফল দাঙ্গা৤ হিন্দুরা এক জাতি, আর মুসলমানেরা আর এক জাতি৤ তাদের পৃথক রাষ্ট্র চাই৤ বাংলা ভাগ করে পৃথক রাষ্ট্র হল৤ এই ভাগ করতে গিয়ে বাঙালির রক্তে নদী বয়ে গেল৤ দেশ তো স্বাধীন হয়ে বাহাত্তুরে হয়েছে(১৯৪৭--২০১৮ =৭২)৤ ভাষা হল মানুষের জাতি-পরিচয়, ‘ধর্ম’ তার 
জাতি-পরিচয় নয়৤ 

       তিনটি জিনিস লক্ষ্য করার মতো, (ক)স্বাধীনতার আগেই ১৯১৩-তে রবীন্দ্রনাথ সাহিত্যে নোবেল পান৤ অর্থাৎ বাংলা ভাষা ও সাহিত্য অত্যন্ত উন্নত ও শক্তিশালী, তাই তা বিশ্বসম্মান নোবেল পেয়েছে, (খ)১৯৩১-এর জনগণনায় দেখা গেল বাংলা ভাষীরা ভারতে জনগরিষ্ঠ, অর্থাৎ ভারতে সব চাইতে বেশি মানুষ মাতৃভাষা হিসেবে বাংলা বলেন৤ (গ)নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু ১৯৩৮-এ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে গুজরাটের সুরাটে তার লিখিত ভাষণ পাঠ করেন বাংলায়৤ অর্থাৎ বাংলা সারা ভারতে সর্বজনবোধ্য৤ 

রবীন্দ্রনাথ 

তখনও জীবিত(৭ই মে, ১৮৬১ -- ৭ই আগস্ট, ১৯৪১)


       বাংলা ভাগের ফল কী? ১৤রক্তনদী, ২৤বাংলাভাষার অস্তিত্ব রক্ষা(দুই বাংলা একত্র থেকে দেশ স্বাধীন হলে বাংলাভাষাটা হয়তো আস্ত অস্ত যেত), ৩৤এক অংশের অবহেলিত মানুষের উজ্জ্বল হয়ে ওঠা,  ৪৤বাংলাভাষার রাষ্ট্র হওয়া, ৬৤দুটি দেশের জাতীয় সংগীত বাংলায় হওয়া, ৭৤সুদূর আফ্রিকার সিয়েরালিয়োনের দ্বিতীয় রাষ্ট্রভাষা বাংলা হওয়া৤ ৮৤রাষ্ট্রসংঘে বাংলা একটি দাপ্তরিক ভাষা হবার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়েছে, ৯৤এতকাল ধরে অবহেলিত মানুষেরাও নোবেল পাবার মত প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পেয়েছেন (মুহাম্মদ ইউনুস, বাংলাদেশ)৤ প্রয়াত খ্যাত সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় একবার বলেছিলেন, বাংলার সাংস্কৃতিক রাজাধানী ঢাকায় চলে যাচ্ছে৤ সে কথাটা এখন আর ‘যাচ্ছে’ নয়-- গেছে৤  



মঙ্গল শোভাযাত্রায় অংশ নেয় সর্বস্তরের মানুষ, শাহবাগ, ঢাকা ১৪ এপ্রিল, ছবি শুভ্রকান্তি দাশ৤
প্রথম আলো, সংবাদপত্র৤ পহেলা বৈশাখ ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

       একটা কথা, পশ্চিমবঙ্গে বাঙালি কোটিপতি কতজন? বোধহয় এক আঙুলে গুণে শেষ করা যাবে৤ বাংলাদেশে কোটিপতি ১ লাখ ১৪ হাজার ২৬৫(তথ্য ২০১৩ খ্রিস্টাব্দ)৤ “গত পাঁচ বছরে কোটিপতির সংখ্যা বেড়েছে প্রায় ৩৬ হাজার”(BBC, বাংলা)৤ স্বাভাবিকভাবে পৃথিবীতে “Bangla”-র দেশ হিসেবে তাই তারাই আজ গণ্য৤  


       দেশ ভাগ, বাংলা ভাগ হয়ে বাঙালির কত যে দুরবস্থা, হেনস্থা হয়েছে তার তালিকা ফুরোবে না৤ তবে সেই দুর্ভোগের মিনারে সূর্যও উঠেছে, সেটা চোখ মেলে দেখতে হবে৤ আমাদের আছে অমেয় সম্পদ-- বৈষ্ণব পদাবলী, আছে হৃদয়-সুখ রবীন্দ্রসংগীত৤ যারা বৈষ্ণবপদাবলী একটুও পড়েননি, তাদের তো বলা যায় মানব জন্মই বৃথা! 

       রবীন্দ্রনাথকে নাকি একবার পশ্চিম দেশে প্রশ্ন করা হয়েছিল, তিনি লেখা পড়া জানেন কিনা? ভাগ্যিস রবীন্দ্রনাথ স্কুলে কলেজে পড়ে ডিগ্রিধারী হননি, হলে তাঁর দাদার মতো এক বিশাল আইসিএস(বর্তমান কালীন আইএএস) হতেন, তাঁর দাদা তো প্রথম ভারতীয় আইসিএস৤ তাহলে আমরা “রবীন্দ্রনাথ” পেতাম না৤ সে দুর্ভাগ্য থেকে বাঙালি বেঁচে গেছে৤ রবীন্দ্রনাথের স্কুল কলেজে না-পড়ার দুর্ভাগ্য বস্তুত বাঙালির সৌভাগ্য রবি হয়ে উঠেছে৤ রবীন্দ্রনাথের পরিবার ছিল প্রকৃত পক্ষে এক বিশ্ববিদ্যালয়, জ্ঞানী গুণী মানুষে ভরা, বাইরের বিদ্যালয়ের দরকার ছিল না৤ 

       সৌভাগ্য-দুর্ভাগ্য সময়ের চক্রে নির্ধারিত হয়৤ আজ যেটাকে দুর্ভাগ্য মনে হচ্ছে সেটার ভিতরে কোন্‌ সৌভাগ্য রবি রয়েছে তা কে জানে? বঙ্গভঙ্গে প্রাণ গেছে, ইজ্জত গেছে, রক্তনদী বয়েছে, হেনস্থার শেষ ছিল না, কিন্তু তা শেষ অবধি এক মঙ্গল আলোকে বাঙালিকে ভূষিত করেছে৤

       ভারতের অন্য কোনও ভাষা এখন অবধি সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পায়নি, পেরিয়েছে ১০৬ বছর৤ বাংলা পেয়েছে চলচ্চিত্রে অস্কার পুরস্কার, সত্যজিতের অপূর্ব সে কীর্তি(১৯৯২)৤ অথচ বিশ্বে সবচেয়ে বেশি সিনেমা তৈরি হয় মুম্বইতে৤ তারা সে সম্মান এখনও অর্জন করেনি৤  

       বাঙালি নিভে যায়নি, অর্থনীতিতে নোবেল পেয়েছেন অমর্ত্য সেন(১৯৯৮),  শান্তিতে নোবেল পেয়েছেন, বাংলা দেশের মুহাম্মদ ইউনুস(২০০৩)৤ সংবাদসাহিত্যে আন্তর্জাতিক ম্যাগসেসে পুরস্কার পেয়েছেন, অমিতাভ চৌধুরি(১৯৬১)৤

       খেলাধুলো, রাজনীতি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য সবদিকে নিজ নিজ প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে হবে৤ বাঙালি যে পারে, প্রবলভাবেই পারে তার প্রমাণ -- প্রিন্স দ্বারকানাথ ঠাকুর৤ যাঁকে বিলেতের রানী এক টেবিলে ভোজ দিয়েছিলেন৤ একজন প্রজার পক্ষে এ ছিল অভাবিত ঘটনা৤ টাকায় কথা বলে, সংগঠিত হতে পারলে কোন বাধাই বাধা নয়৤ 
অগ্রগত বাংলা লিখনকারিগরি দেখুন-- 

দেখুন লিংক:কম্পিউটার বাংলা পড়ে শোনাচ্ছে: 






পরিমার্জন চলছে
সর্বশেষ পরিমার্জন ২২/১০/২০১৮