বঙ্গাব্দ-খ্রিস্টাব্দ
বঙ্গাব্দ-খ্রিস্টাব্দ
বিনামূল্যে ফন্ট ডাউনলোড লিংক--
অথবা
https://sites.google.com/site/ahanlipi/
বঙ্গাব্দ-খ্রিস্টাব্দ
বিনামূল্যে ফন্ট ডাউনলোড লিংক--
অহনলিপি-বাংলা১৪ ইউনিকোড ফন্ট প্যাকেজ ডাউনলোড লিংক:
অথবা
https://sites.google.com/site/ahanlipi/
ডাউনলোড করা এই ইউনিকোড ফন্ট প্যাকেজের মধ্যে আছে ইউনিকোড
ফন্ট(কম্পিউটারে লেখার হরফসমূহ) AhanLipi-Bangla14.ttf , তার উপরে ক্লিক করলে ফন্ট ইনস্টল হয়ে যাবে সঙ্গে কিবোর্ড(setup.exe) দেওয়া আছে তাতে
ক্লিক করলে কিবোর্ড ইনস্টল হয়ে যাবে কিবোর্ড দিয়ে সহজে লিখতে পারবেন
যুক্তবর্ণ স্বচ্ছ, সহজ সঙ্গে কিবোর্ডের নক্সা দেওয়া
আছে
অন্যান্য ফন্টও ডাউনলোড করে নিন
এই ফন্ট না হলে
লেখার উদ্দেশ্য বোঝা যাবে না
২৪/০৭/২০১৮
মঙ্গলবার
বঙ্গাব্দ-খ্রিস্টাব্দ
মনোজকুমার
দ. গিরিশ
বাংলা বছরের হিসেবকে বলা হয় বঙ্গাব্দ, এবং
খ্রিস্টীয় বছরের হিসেব হল খ্রিস্টাব্দ বঙ্গ অব্দ(বছর)-- বঙ্গাব্দ, খ্রিস্ট
অব্দ(বছর)-- খ্রিস্টাব্দ অনেক লেখাতে দেখা যায় অমুক সাল, বা অমুক সন এতে নির্দিষ্ট
করে বছর বোঝানো হয় ঠিকই, কিন্তু সেটা বঙ্গীয় বছর, নাকি তা খ্রিস্টীয় বছর, তা নিয়ে
মনে দ্বিধা দেখা দেয় বিশেষ করে তা যদি বেশ পুরানো দিনের উল্লেখ হয় কেউ কেউ আবার ইংরেজি
তারিখকেও আনমনে সাল, বা সন বলেন, এতে
বাংলা বছরের সঙ্গে তা গুলিয়ে যায়
তাই এ ব্যাপারে স্পষ্ট হবার জন্য সাল, সন
না লিখে সেটা বঙ্গাব্দ বা খ্রিস্টাব্দ তা স্পষ্ট করে লেখাই ভালো
আর একটি কথা আমাদের ব্যবহারিক জীবনে
বঙ্গাব্দের চলন নেই তাই বঙ্গাব্দ লিখলে সেটা যে কোন্ খ্রিস্টাব্দ তা পাশে লিখে
দিলে বুঝতে সুবিধে হয় এতে সময়ের হিসেবটা আরও স্পষ্ট হবে নয়তো শুধু বঙ্গাব্দ
লিখলে সেটা প্রায় রহস্যের আড়ালে চলে যায় বাংলায় সর্বাধিক প্রচারিত সংবাদপত্র আঃবাঃ
সম্পাদকীয় পৃষ্ঠায় শুধু বঙ্গাব্দ ব্যবহার করলেও লোকে অন্য পৃষ্ঠা খোঁজেন ইংরেজি
তারিখটা জেনে নিতে নয়তো নিজেকে যেন হারিয়ে ফেলেন, পথভ্রান্তি ঘটবে বলে যেন হতাশ হন
বাংলা বছর হল আসলে ফসলী সন, কারণ মুসলিম
বছর যেহেতু চান্দ্র মাস অনুসারে গণনা করা হয়, তাই ফসলের মাধ্যমে খাজনা আদায়ে
সমস্যা হত, তাই আকবরের কালে হিজরি সন থেকে বঙ্গাব্দের সূচনা
হয়(৯৯২হিজরি=১৫৮৪খ্রিঃ) এতে খাজনা আদায়ে সুবিধে হল, কারণ বঙ্গাব্দ হল সৌর সন তাই বছরের
নির্দিষ্ট সময়ে ফসলের মাধ্যমে খাজনা আদায়ে সুবিধে হল
৬২২খ্রিস্টাব্দ থেকে হিজরি তথা বঙ্গাব্দের
সূচনা ধরা যায় “এই বৎসর বিশ্বনবী হজরত মুহম্মদ(দঃ) কুরাইশদের অত্যাচারে জন্মভূমি মক্কা
থেকে মদিনাতে আশ্রয় নেন এই গমনকে আরবিতে ‘হিজরত’ বলা হয় হিজরতের স্মৃতি রক্ষার্থে
সনের প্রচলন হয় বলে একে হিজরি সন বলা হয় হিজরতের ৯৯৩(হিজরি) বছর পরে দিল্লির
সম্রাট আকবর সিংহাসনে আরোহণ করেন সম্রাটের সিংহাসনে আরোহণের স্মৃতির সংগে যুক্ত করে বাংলা সনের প্রতিষ্ঠা করা হয়”(বাংলা
সনের জন্মকথা, মুঃ আবু তালিব, বাংলা একাডেমী, ঢাকা)
নতুন বছরের শুরুতে যদিও হালখাতা ইত্যাদি অনেক
হিন্দু আচরণের ব্যাপার থাকে, হিসেবটি কিন্তু প্রকৃত পক্ষে মুসলমানী ‘সৌর’ বছর এর
মধ্যে উভয় সংস্কৃতির মিলন আছে
জাতিটা বাঙালি, তাদের কারও ধর্ম ইসলাম,
কারও হিন্দু, কারও খ্রিস্টান, কারও বৌদ্ধ যার যেমন ধর্মবিশ্বাস, সে তেমন ধর্মী,
তাতে জাতীয়তার হেরফের হয় না ভাষা হল মানুষের জাতি পরিচয়, আত্মপরিচয় ধর্ম মানুষের
জাতিপরিচয় নয়
বাঙালিদের প্রধান ধর্মীয় বিভাগ চারটি --
মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ প্রথমে মুসলমানের উল্লেখ করা হল এই কারণে যে
তারা সংখ্যা গরিষ্ঠ, তার পরে হিন্দু, তারপরে খ্রিস্টান, শেষে বৌদ্ধ এটা হল সংখ্যানুক্রমিক
তালিকাকরণ
বঙ্গীয় সংস্কৃতি ও সভ্যতার উপরে এই চারটি
ধর্মের প্রভাব কী রকম, তা বিচার করলে দেখা যাবে--
বৌদ্ধ-- প্রাচীন বাংলা ছিল বৌদ্ধ, সেই পাল
রাজাদের আমলে পুরো বাংলাই ছিল বৌদ্ধ, পাল রাজারাও ছিলেন বৌদ্ধ সেই সময়কালেই বাংলা
ভাষার জন্ম বা উদ্ভব হয় তা হলে বলা যায় যে, ধর্মীয়ভাবে বৌদ্ধদের অবদান হল বাংলা
ভাষার সৃজন
মুসলমান-- হিজরি সন অনুসারে ফসল দিয়ে খাজনা
আদায়ে সমস্যা হত বলে সেই সনকে সৌর সনে রূপান্তরিত করায় খাজনা আদায়ে সুবিধে হয় এই
সৌর হিজরি সনই হল বঙ্গাব্দ তাহলে ধর্মীয়ভাবে মুসলিম অবদান হল বছর গণনা
খ্রিস্টান-- পাশ্চাত্য ধর্ম হল খ্রিস্ট
ধর্ম তারা এদেশে আসায় এখানে খ্রিস্ট ধর্মের প্রচার হয়ছে, এবং পাশ্চাত্য সভ্যতার
প্রভাবে বঙ্গীয়রা ক্রমে আধুনিকতার আলোয় আলোকিত, উদ্ভাসিত হয়েছে তাই ধর্মীয়ভাবে
খ্রিস্ট ধর্মের অবদান হল আধুনিকতা
হিন্দু-- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পূর্বপুরুষ
ছিলেন পতিত ব্রাহ্মণ, পিরালি বামুন পরে তাঁর পিতা ও অন্যরা মিলে ব্রাহ্ম ধর্মের
অবতারণা করেন, তাই রবীন্দ্রনাথকে ব্রাহ্ম বলা হলেও তিনি আসলে হিন্দুই, অবশ্য পতিত(ব্রাহ্মণ)
হিন্দু! (যে-কারণে তাঁকে জীবনে অশেষ হেনস্থার শিকার হতে হয়েছে) তাই ধর্মীয়ভাবে
হিন্দুদের অবদান হল বিশ্ব সম্মান, বিশ্ব পরিচিত-- সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ(১৯১৩)
এখন অবধি ভারতীয় অন্য কোনও ভাষা সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার পায়নি অমিত প্রতিভাধর
রবীন্দ্রনাথ ভারতের পরাধীনতার অন্ধকার আমলেই সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন, যা
ছিল ইউরোপের বাইরেই সাহিত্যে প্রথম নোবেল প্রাপ্তি
বাংলা ভাষা-সংস্কৃতির সমগ্র পরিমণ্ডল কোনও
একক ধর্মীয় অবদান নয়, সামগ্রিক সম্মিলিত অবদান তাই বাংলার কোনও প্রকার বিপন্নতা
সকল বাঙালিকেই চিন্তিত, উদ্বিগ্ন করেবাংলার
পুব অংশে তাই হয়েছে ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’, হয়েছে “বাংলাদেশ”, আসামে হয়েছে বাংলাভাষার
মান রাখতে একাদশ শহিদের প্রাণদান, যে তালিকায় আছে নির্ভীক তরুণীও মাগো, সবাইকে
মানুষ কর মা!
আপামর বাঙালি-- প্রাণউৎসর্গকারী
ভাষাশহিদদের প্রতি আভূমি সেলাম জানায়
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন